১৪ অক্টোবর ২০১৪

দুইটি কবিতা-পাভেল আল ইমরান



পাভেল আল ইমরানের দুইটি কবিতা

শেয়ালের স্তনন

বিভত্স বনবিড়ালের মারবেল চোখে
অন্ধকারের খনিজ ,বয়স বাড়ছে
ভয়াল জলের কালো পুকুরের পার বেয়ে
রজনীর
আমি কান পাতি কিছু জীবের নিশ্বাসে

হেটে যাই ধান ক্ষেত বেয়ে
কৃষক হয়তো ঘরে ফিরছে পাকনা ধানগুলো কেটে
শাণিত ছুরির মত নারা
মাছহীন জলে ভরা খালের বাহুতে দুটি
অশ্বথ গাছের পরে
মৃত ডাহুকের পাখাগুলোর পাশেই
তেঁতুল গাছের তলে
আর্তনাদ মাখা নিরেট কন্ঠের শিয়াল স্তনন
'
হেইলোচ ,হেইলোচ ...
বলিরে বলি,আরো জোরে
ওরে বলি...'


এরা মানুষের মত শব্দ করে
তবু এরা মানুষ না
ঠ্যাং ,চোখ ,চোখের ভ্রু ',ভ্রু'র নিচে মনিটর
মনিটরে হাটা জ্যান্ত ছবি
এরা মানুষের মতই তাকায়
তবু এরা মানুষ না


এ রকম শেয়াল বিষন্ন মুখের এক রাতে
বুড়িগঙ্গার জংশন পাশে
এদের নদীতে ডুবে দেখলাম
বিদগ্ধ শরীর কত জোহর ছড়াতে পারে
জলের নৈসর্গে
যেন গেরস্তের ঘরে অবাঁচ্ছিত চরের মতন,এরা
সেখানে শ্বাসের শব্দটি ও গিলে খায়


শুধু বাঁধ হীন অধ্রুব স্রোতের মত
নিশ্বাসে সেদ্ধ ধানের ভাঁপ হয়
উর্ধ্বমুখী শেয়ালের নিস্তন-


'
হেইলোচ ,হেইলোচ...
বলিরে বলি,আরো জোরে
ওরে বলি...'
এরা মানুষের মত নিশ্বাসের যাতায়াত সারে
তবু এরা মানুষ না.........

বকবক-২০১২
 
.
কসবির কোলের অপত্যদের জনকরা
ঝা চকচকে বাড়ির ডগা থেকে শুরু করে
বেয়ে বেয়ে ভেসে চলেছে শহর জুড়ে ,ফুটপাতে
অক্রেয় পরিচ্ছদের নির্যাস বেরোয় ঝাঁঝালো পারফিউম
জুতোয় মসির ঝলকানে গাল ভর্তি ভদ্দুরতা

পটল চেরায় চাকু গেঁথে দিয়ে স্যুইংগাম চিবিয়ে চিবিয়ে বলে-
'
চেরা পটল কেজিতে অনেক পাওয়া যায় -
ওজন হ্রস্বতরের পথে যাত্রী -তেমনি উত্পাদনও দেদারচে...
'
নিক্তি থেকে দুপায়ে এগিয়ে বেশ্যা বলে -
'
বেশ্যার সাকল্য জরিপে ফায়দা আর কি হে ...
...
এক শরীরে তো বেজায় খদ্দের রোজ বিদেয় করছি ...'
.
বিশুদ্ধ শরীরে নোংরা জল ভরে
হাটতে হাটতে আচলের জল উঠোন ভিজায়
মৃত্তিকা না দেখে চলা রাহী তো পিছলে পড়বেই

নুপুরের সুরে মাতাল হয়োনা,এটা
অপবিত্র বেশ্যার পয়সা মেরে
ওর পরকিয়া প্রেমিক দিয়েছে কিনে .
.
আমাদের ;যারা বেপথে আনন্দ খুজি
একখানা পথ ছিল
মানবিকতা যখন ক্ষয়ে ক্ষয়ে চর
চরেও এখন আর চাকচিক্য নেই
ভেড়ি পরিকল্পনায় কোটি কোটি নিস্পল বাজেট
অংকুরেই শুকনো চরে বালু
আমাদের চোখের হেডলাইট বের করে
ঘুরিয়ে দিয়েছি শুধু নিজের দিকেই
পৃথিবীর সব তাই ঢুকে যাচ্ছে নিজের ভেতর

লঘিষ্ঠরা ;পৃথিবীতে চোখ রেখে হাটে,
ক্রমে একা হতে হতে বিলুপ্ত শংখশালিখ .
.
ব্যবস়ায়ীরা সমস্ত দেশ ঘুরে ,ক্ষেতে ক্ষেতে
পৌছে ,বস্তা ভরে সংগ্রহ করছে পণ্য
ডিসপ্লে করছে মহাসমাবেশে ,মানুষের মাথা
কে কত অধিক পণ্য মজুদে গর্বিত
একপাল বাড়াটে জনতা প্রতিনিধি প্রতিচ্ছবি হয়ে ছবি
সঁচিত হয়না ;করা হয় ...

1 টি মন্তব্য: