নাগমণ্ডলার রচয়িতা গিরিশ কারনাড দক্ষিণ ভারতীয় লোককাহিনী থেকে নাটকের বিষয়বস্তু সংগ্রহ করেছেন। দক্ষিণ ভারতের গ্রামগুলোর বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল নাগদেবতার প্রতি গভীর বিশ্বাস। সাপ, ভূত, মন্ত্রতন্ত্র নিয়ে দক্ষিণ ভারতীয় গ্রামবাসীরা যতটা চর্চা করে ভারতের কোথাও ততটা এই ধরনের সংস্কার নেই। নাটককার একটি মনোহারিণী প্লট তৈরি করেছেন। প্লটের দুটো স্তর। এক গ্রাম্য নাট্যরচয়িতার গল্প প্রথম স্তরে। সৃজনশীল মানুষরা যেমন ভবঘুরে হয়ে, এই নাট্যরচয়িতাও তাই। এখানেও গ্রাম্য বিশ্বাসগুলি থেকে উপাদান সংগ্রহ করে যথাযথভাবে পরিবেশন করা হয়েছে। দ্বিতীয় স্তরের গল্পটি এক যুবতী ও তার অপদার্থ স্বামীকে নিয়ে যাদের জীবনে দৈবাৎ অাবির্ভাব ঘটে এক নাগদেবতার। অযোগ্য স্বামীর সাথে বিবাহের বন্ধন অস্বীকার করে নাগদেবতার সাথে প্রণয় সম্পর্ক মেনে নেওয়ার মধ্যে যুবতীরঅন্ত:সারশূন্য সামাজিক প্রথার প্রতি বিদ্রোহী মনোভাব ফুটে উঠেছে। কিন্তু সে সরাসরি সমাজের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেনি। সমাজ ও স্বামীকে লুকিয়ে সে গোপন সম্পর্ক চালু রেখেছে। সমাজের অনেক প্রথাই হয়তো খারাপ, কিন্তু একলা সেগুলোর বিরোধিতা করা হঠকারিতা। যুবতী এখানে বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছে। নাটকটির মাধ্যমে আর একটি বিষয় আমাদের কাছে পরিষ্কার হয় যে কোনো গল্পের সুষ্ঠু পরিণতি আসলে গল্পের মৃত্যু ঘটায়। জীবন্ত গল্প সেটাই যার শেষ নেই। নাটকটি আদপে নৃত্যনাট্য। নাচের ব্যবহার ও অভিনয় অসাধারণ।বিশেষত অনির্বাণ ও তৃণার performance মুগ্ধ করে। অসাধারণ অবন্তী চক্রবর্তীর নির্দেশনা। গান, আলো ও মঞ্চসজ্জা প্রয়োজন অনুযায়ী যথাযথ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন